Dhaka , বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫

জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট—আজই তফসিল ঘোষণা

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে গণভোট—দুটি গুরুত্বপূর্ণ আয়োজনের তফসিল আজ বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) ঘোষণা করা হচ্ছে। সন্ধ্যা ৬টায় জাতির উদ্দেশে ভাষণে ভোটের আনুষ্ঠানিক সূচি জানাবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) বিকেলে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান ইসি সচিবালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ। এর আগেই বিকেল চারটার দিকে সিইসির ভাষণ রেকর্ড করে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর একই বছরের ৮ আগস্ট দায়িত্ব নেয় অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। প্রায় ১৬ মাস পর সেই সরকারের অধীনেই আজ জাতীয় নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল প্রকাশ করতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন।
রাজনৈতিক সমঝোতা এবং সময়সূচি নিয়ে নানা পরিবর্তনের পর এ আয়োজন চূড়ান্ত হয়। শুরুতে বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন দাবি করলেও পরে সময় পরিবর্তন হতে থাকে। ৬ জুন জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে ভোট আয়োজনের পরিকল্পনার কথা বলেছিলেন। এরপর ১৩ জুন লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকে ভোটের সময় এগিয়ে এনে ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে আয়োজনের বিষয়ে সমঝোতা হয়।
পরে সরকার জানায়—ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। একই দিনে গণভোট আয়োজনের সিদ্ধান্ত আসে ১৩ নভেম্বর।
তফসিল ঘোষণার আগে ঐতিহ্যগত নিয়মে বুধবার দুপুরে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন সিইসি ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার। বৈঠকে ভোটার তালিকা, প্রবাসী ভোট, রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধন, ভোট গণনার পদ্ধতি ও একই দিনে নির্বাচন-গণভোট আয়োজনের প্রস্তুতিসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরে কমিশন। রাষ্ট্রপতি প্রস্তুতিতে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন বলে জানান ইসি সচিব।
২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারির বিতর্কিত দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের পর নতুন নির্বাচন কমিশন গঠিত হয় ২১ নভেম্বর। তাদের নেতৃত্বে এবারই প্রথম অনুষ্ঠিত হচ্ছে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট—যা সময় ব্যবস্থাপনা ও নিরাপত্তার দিক থেকে একটি বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছে ইসি।
এ কারণে ভোট গ্রহণের সময় এক ঘণ্টা বাড়িয়ে সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। কেন্দ্রগুলোতে বাড়ানো হবে গোপন কক্ষের সংখ্যা। পাশাপাশি ভোট-নিরাপত্তায় এবার সর্বোচ্চ সংখ্যক—প্রায় ৯ লাখ সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। বিশেষ প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেছে আরও দেড় লাখ পুলিশ সদস্য।
নতুন সীমানা নিয়েও গতকাল গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আসে। ৪ সেপ্টেম্বর বাগেরহাটে একটি আসন কমিয়ে তিনটিতে নামানো হলেও হাইকোর্টের নির্দেশ এবং পরে আপিল বিভাগের আদেশে আগের চারটি আসনই বহাল থাকে। তবে রায়ের পূর্ণ কপি হাতে না আসায় আপাতত ৪ সেপ্টেম্বরের সীমানা অনুযায়ীই তফসিল ঘোষণা করবে ইসি। কপি পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় সংশোধন করা হবে।

ট্যাগ :

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

জনপ্রিয় খবর

জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট—আজই তফসিল ঘোষণা

আপডেট সময় : ৪ ঘন্টা আগে

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে গণভোট—দুটি গুরুত্বপূর্ণ আয়োজনের তফসিল আজ বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) ঘোষণা করা হচ্ছে। সন্ধ্যা ৬টায় জাতির উদ্দেশে ভাষণে ভোটের আনুষ্ঠানিক সূচি জানাবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) বিকেলে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান ইসি সচিবালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ। এর আগেই বিকেল চারটার দিকে সিইসির ভাষণ রেকর্ড করে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর একই বছরের ৮ আগস্ট দায়িত্ব নেয় অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। প্রায় ১৬ মাস পর সেই সরকারের অধীনেই আজ জাতীয় নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল প্রকাশ করতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন।
রাজনৈতিক সমঝোতা এবং সময়সূচি নিয়ে নানা পরিবর্তনের পর এ আয়োজন চূড়ান্ত হয়। শুরুতে বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন দাবি করলেও পরে সময় পরিবর্তন হতে থাকে। ৬ জুন জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে ভোট আয়োজনের পরিকল্পনার কথা বলেছিলেন। এরপর ১৩ জুন লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকে ভোটের সময় এগিয়ে এনে ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে আয়োজনের বিষয়ে সমঝোতা হয়।
পরে সরকার জানায়—ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। একই দিনে গণভোট আয়োজনের সিদ্ধান্ত আসে ১৩ নভেম্বর।
তফসিল ঘোষণার আগে ঐতিহ্যগত নিয়মে বুধবার দুপুরে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন সিইসি ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার। বৈঠকে ভোটার তালিকা, প্রবাসী ভোট, রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধন, ভোট গণনার পদ্ধতি ও একই দিনে নির্বাচন-গণভোট আয়োজনের প্রস্তুতিসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরে কমিশন। রাষ্ট্রপতি প্রস্তুতিতে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন বলে জানান ইসি সচিব।
২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারির বিতর্কিত দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের পর নতুন নির্বাচন কমিশন গঠিত হয় ২১ নভেম্বর। তাদের নেতৃত্বে এবারই প্রথম অনুষ্ঠিত হচ্ছে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট—যা সময় ব্যবস্থাপনা ও নিরাপত্তার দিক থেকে একটি বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছে ইসি।
এ কারণে ভোট গ্রহণের সময় এক ঘণ্টা বাড়িয়ে সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। কেন্দ্রগুলোতে বাড়ানো হবে গোপন কক্ষের সংখ্যা। পাশাপাশি ভোট-নিরাপত্তায় এবার সর্বোচ্চ সংখ্যক—প্রায় ৯ লাখ সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। বিশেষ প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেছে আরও দেড় লাখ পুলিশ সদস্য।
নতুন সীমানা নিয়েও গতকাল গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আসে। ৪ সেপ্টেম্বর বাগেরহাটে একটি আসন কমিয়ে তিনটিতে নামানো হলেও হাইকোর্টের নির্দেশ এবং পরে আপিল বিভাগের আদেশে আগের চারটি আসনই বহাল থাকে। তবে রায়ের পূর্ণ কপি হাতে না আসায় আপাতত ৪ সেপ্টেম্বরের সীমানা অনুযায়ীই তফসিল ঘোষণা করবে ইসি। কপি পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় সংশোধন করা হবে।