Dhaka , শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫

উদ্ধার হলেও বাঁচানো গেল না শিশু সাজিদকে

রাজশাহীর তানোরে গভীর নলকূপের গর্তে পড়ে যাওয়া দুই বছরের শিশু সাজিদের বাঁচানো গেল না। টানা ৩২ ঘণ্টা শ্বাসরুদ্ধ উদ্ধার অভিযান শেষে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা তাকে জীবিত উদ্ধার করলেও পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৭ মিনিটে তানোরের কোয়েলহাট পূর্বপাড়া এলাকার প্রায় ৫০ ফুট নিচ থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। এরপর রাত ৯টা ৪০ মিনিটে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরীক্ষা–নিরীক্ষার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. বার্নাবাস হাসদাক। তিনি জানান, “শিশুটিকে মৃত ঘোষণার পর মরদেহ তার বাবার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।”
বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মায়ের সঙ্গে জমিতে যাওয়ার সময় গভীর নলকূপ স্থাপনের জন্য খুঁড়ে রাখা একটি গভীর বোরিং গর্তে পড়ে যায় সাজিদ। কিছুক্ষণ আগে পর্যন্ত মায়ের পেছনে পেছনে হাঁটতে থাকা শিশুটির ‘মা–মা’ ডাক হঠাৎ থেমে গেলে মা ফিরে দেখেন, সাজিদ আর সঙ্গে নেই। স্থানীয়দের সহায়তায় খোঁজাখুঁজি করতে গিয়ে জানা যায়—গর্তেই পড়ে গেছে শিশু সাজিদ।
খবর পেয়ে তানোর থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। পরে রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে অতিরিক্ত ইউনিট এসে অভিযানে যোগ দেয়।
ফায়ার সার্ভিসের ৮টি ইউনিট একযোগে কাজ করে প্রায় ৪৫ ফুট মাটি খনন করে একটি সুড়ঙ্গ তৈরি করে শিশুটিকে পৌঁছানোর চেষ্টা চালায়। দীর্ঘ সময় ধরে অক্লান্ত পরিশ্রমের পর অবশেষে ৩২ ঘণ্টা পর সাজিদকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়। ফায়ার সার্ভিসের রাজশাহী স্টেশনের সহকারী পরিচালক দিদারুল ইসলাম বলেন, আমরা শিশুটিকে উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে পাঠিয়েছি।
সাজিদ কোয়েলহাট পূর্বপাড়া গ্রামের রাকিব উদ্দিন ও রুনা বেগম দম্পতির একমাত্র সন্তান ছিল। তার মৃত্যুতে পুরো গ্রামে নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া।

ট্যাগ :

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

জনপ্রিয় খবর

উদ্ধার হলেও বাঁচানো গেল না শিশু সাজিদকে

আপডেট সময় : ১৬ ঘন্টা আগে

রাজশাহীর তানোরে গভীর নলকূপের গর্তে পড়ে যাওয়া দুই বছরের শিশু সাজিদের বাঁচানো গেল না। টানা ৩২ ঘণ্টা শ্বাসরুদ্ধ উদ্ধার অভিযান শেষে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা তাকে জীবিত উদ্ধার করলেও পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৭ মিনিটে তানোরের কোয়েলহাট পূর্বপাড়া এলাকার প্রায় ৫০ ফুট নিচ থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। এরপর রাত ৯টা ৪০ মিনিটে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরীক্ষা–নিরীক্ষার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. বার্নাবাস হাসদাক। তিনি জানান, “শিশুটিকে মৃত ঘোষণার পর মরদেহ তার বাবার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।”
বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মায়ের সঙ্গে জমিতে যাওয়ার সময় গভীর নলকূপ স্থাপনের জন্য খুঁড়ে রাখা একটি গভীর বোরিং গর্তে পড়ে যায় সাজিদ। কিছুক্ষণ আগে পর্যন্ত মায়ের পেছনে পেছনে হাঁটতে থাকা শিশুটির ‘মা–মা’ ডাক হঠাৎ থেমে গেলে মা ফিরে দেখেন, সাজিদ আর সঙ্গে নেই। স্থানীয়দের সহায়তায় খোঁজাখুঁজি করতে গিয়ে জানা যায়—গর্তেই পড়ে গেছে শিশু সাজিদ।
খবর পেয়ে তানোর থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। পরে রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে অতিরিক্ত ইউনিট এসে অভিযানে যোগ দেয়।
ফায়ার সার্ভিসের ৮টি ইউনিট একযোগে কাজ করে প্রায় ৪৫ ফুট মাটি খনন করে একটি সুড়ঙ্গ তৈরি করে শিশুটিকে পৌঁছানোর চেষ্টা চালায়। দীর্ঘ সময় ধরে অক্লান্ত পরিশ্রমের পর অবশেষে ৩২ ঘণ্টা পর সাজিদকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়। ফায়ার সার্ভিসের রাজশাহী স্টেশনের সহকারী পরিচালক দিদারুল ইসলাম বলেন, আমরা শিশুটিকে উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে পাঠিয়েছি।
সাজিদ কোয়েলহাট পূর্বপাড়া গ্রামের রাকিব উদ্দিন ও রুনা বেগম দম্পতির একমাত্র সন্তান ছিল। তার মৃত্যুতে পুরো গ্রামে নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া।