Dhaka , বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫

অপরাধের লাগামহীন বৃদ্ধি: খুন ৩৫০৯

পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্যে দেখা যায়—চলতি বছরের ১১ মাসে দেশে মোট ১,৬৮,৫০৫টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে খুনের ঘটনা ৩,৫০৯টি।
এ সময়—

ডাকাতি: ৫৭৮

দস্যুতা: ১,৮০৩

নারী ও শিশু নির্যাতন: ২০,৬৯১

অপহরণ: ১,০১৪

পুলিশের ওপর হামলা: ৫৭২

সিঁধেল চুরি: ২,৮১৯

চুরি: ৯,০০৪

২০২৪ সালে মোট মামলা ছিল ১,৭২,০০৫ এবং ২০২৩ সালে ১,৯৫,৪৩৬টি।

ঢাকায় এককভাবে মামলা হয়েছে ১৭,৫০২টি।

বছরের আলোচিত কয়েকটি ঘটনা

১৯ অক্টোবর পুরান ঢাকার আরমানিটোলায় টিউশনিতে যাওয়ার পথে ছুরিকাঘাতে নিহত হন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জুবায়েদ হোসাইন। পরে পুলিশ জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করে।

ঢাকা–রাজশাহীগামী একটি বাসে অস্ত্রের মুখে যাত্রীদের জিম্মি করে ডাকাতি এবং দুই নারী যাত্রীকে ধর্ষণ করা হয়। যাত্রীদের অভিযোগ—বাস চালক ও স্টাফরাও সহযোগিতা করেছিলেন। পুলিশ চালক, সুপারভাইজার ও সহকারীকে আটক করে।

১৭ নভেম্বর মিরপুর ১২ সেকশনে দোকানে ঢুকে যুবদল নেতা গোলাম কিবরিয়াকে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। পালানোর সময় তারা আরও একজন অটোরিকশাচালককে গুলি করে।

৯ জুলাই পুরান ঢাকার মিটফোর্ড এলাকায় লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে কুপিয়ে ও পাথর দিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যা করা হয়। ঘটনাটি ভিডিওসহ ভাইরাল হয়ে আতঙ্ক ছড়ায়।

মানবাধিকার সংগঠন এইচআরএসএস জানায়—জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত গণপিটুনি ও মব সহিংসতার ২৫৬টি ঘটনায় ১৪০ জন নিহত এবং ২৩১ জন আহত হয়েছেন। গত দশকে এসব ঘটনায় সহস্রাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছে।

৯৯৯–এ গেল ১০ মাসে মারামারি-সংঘর্ষ সংক্রান্ত কল এসেছে ৭৯,২৩৯টি। এ ছাড়া—

ধর্ষণ: ৯৮৮

ধর্ষণচেষ্টা: ৫৫৭

যৌন হয়রানি: ৯৮৭

ইভটিজিং: ৭৯৩

স্বামী কর্তৃক নির্যাতন: ১৪,৯২৮

অন্যান্য নারী নির্যাতন: ৫,৮১০

অপহরণ: ৪৬

অনেক কলেই পুলিশ তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়েছে।

উদ্ধার হয়নি ১,৩৪০টি লুট হওয়া অস্ত্র

৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে দেশব্যাপী ৫,৭৬৩টি অস্ত্র লুট হয়। উদ্ধার হয়েছে ৪,৪২৩টি। এখনো ১,৩৪০টি অস্ত্র অপরাধীদের হাতে রয়েছে—যা আইনশৃঙ্খলার জন্য বড় ঝুঁকি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

সাবেক আইজিপি নূরুল হুদা বলেন—লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার ও অপরাধীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা জরুরি।

অপরাধ বিশ্লেষক ড. তৌহিদুল হক বলেন—অপরাধ কমার কথা থাকলেও তা বাড়ছে। একটি চক্র অপরাধকে উপার্জনের উৎসে পরিণত করেছে। দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার জরুরি।

আইনজীবী কে এম মাহফুজ মিশু বলেন—অপরাধীরা সহজে জামিন পেয়ে আবার অপরাধে জড়াচ্ছে। প্রক্রিয়াটি কঠোর হওয়া উচিত।

পুলিশের এআইজি (মিডিয়া) এ এইচ এম শাহাদাত হোসাইন বলেন—অপরাধ দমাতে গোয়েন্দা নজরদারি ও টহল বাড়ানো হয়েছে। লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান চলমান। নির্বাচনকে সামনে রেখে পুলিশ আরও সতর্ক রয়েছে।

ট্যাগ :

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

জনপ্রিয় খবর

অপরাধের লাগামহীন বৃদ্ধি: খুন ৩৫০৯

আপডেট সময় : ১২:৪৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৫

পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্যে দেখা যায়—চলতি বছরের ১১ মাসে দেশে মোট ১,৬৮,৫০৫টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে খুনের ঘটনা ৩,৫০৯টি।
এ সময়—

ডাকাতি: ৫৭৮

দস্যুতা: ১,৮০৩

নারী ও শিশু নির্যাতন: ২০,৬৯১

অপহরণ: ১,০১৪

পুলিশের ওপর হামলা: ৫৭২

সিঁধেল চুরি: ২,৮১৯

চুরি: ৯,০০৪

২০২৪ সালে মোট মামলা ছিল ১,৭২,০০৫ এবং ২০২৩ সালে ১,৯৫,৪৩৬টি।

ঢাকায় এককভাবে মামলা হয়েছে ১৭,৫০২টি।

বছরের আলোচিত কয়েকটি ঘটনা

১৯ অক্টোবর পুরান ঢাকার আরমানিটোলায় টিউশনিতে যাওয়ার পথে ছুরিকাঘাতে নিহত হন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জুবায়েদ হোসাইন। পরে পুলিশ জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করে।

ঢাকা–রাজশাহীগামী একটি বাসে অস্ত্রের মুখে যাত্রীদের জিম্মি করে ডাকাতি এবং দুই নারী যাত্রীকে ধর্ষণ করা হয়। যাত্রীদের অভিযোগ—বাস চালক ও স্টাফরাও সহযোগিতা করেছিলেন। পুলিশ চালক, সুপারভাইজার ও সহকারীকে আটক করে।

১৭ নভেম্বর মিরপুর ১২ সেকশনে দোকানে ঢুকে যুবদল নেতা গোলাম কিবরিয়াকে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। পালানোর সময় তারা আরও একজন অটোরিকশাচালককে গুলি করে।

৯ জুলাই পুরান ঢাকার মিটফোর্ড এলাকায় লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে কুপিয়ে ও পাথর দিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যা করা হয়। ঘটনাটি ভিডিওসহ ভাইরাল হয়ে আতঙ্ক ছড়ায়।

মানবাধিকার সংগঠন এইচআরএসএস জানায়—জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত গণপিটুনি ও মব সহিংসতার ২৫৬টি ঘটনায় ১৪০ জন নিহত এবং ২৩১ জন আহত হয়েছেন। গত দশকে এসব ঘটনায় সহস্রাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছে।

৯৯৯–এ গেল ১০ মাসে মারামারি-সংঘর্ষ সংক্রান্ত কল এসেছে ৭৯,২৩৯টি। এ ছাড়া—

ধর্ষণ: ৯৮৮

ধর্ষণচেষ্টা: ৫৫৭

যৌন হয়রানি: ৯৮৭

ইভটিজিং: ৭৯৩

স্বামী কর্তৃক নির্যাতন: ১৪,৯২৮

অন্যান্য নারী নির্যাতন: ৫,৮১০

অপহরণ: ৪৬

অনেক কলেই পুলিশ তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়েছে।

উদ্ধার হয়নি ১,৩৪০টি লুট হওয়া অস্ত্র

৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে দেশব্যাপী ৫,৭৬৩টি অস্ত্র লুট হয়। উদ্ধার হয়েছে ৪,৪২৩টি। এখনো ১,৩৪০টি অস্ত্র অপরাধীদের হাতে রয়েছে—যা আইনশৃঙ্খলার জন্য বড় ঝুঁকি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

সাবেক আইজিপি নূরুল হুদা বলেন—লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার ও অপরাধীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা জরুরি।

অপরাধ বিশ্লেষক ড. তৌহিদুল হক বলেন—অপরাধ কমার কথা থাকলেও তা বাড়ছে। একটি চক্র অপরাধকে উপার্জনের উৎসে পরিণত করেছে। দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার জরুরি।

আইনজীবী কে এম মাহফুজ মিশু বলেন—অপরাধীরা সহজে জামিন পেয়ে আবার অপরাধে জড়াচ্ছে। প্রক্রিয়াটি কঠোর হওয়া উচিত।

পুলিশের এআইজি (মিডিয়া) এ এইচ এম শাহাদাত হোসাইন বলেন—অপরাধ দমাতে গোয়েন্দা নজরদারি ও টহল বাড়ানো হয়েছে। লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান চলমান। নির্বাচনকে সামনে রেখে পুলিশ আরও সতর্ক রয়েছে।