টানা দু’দিন ধরে হিমালয়ের দিক থেকে ধেয়ে আসা কনকনে হাওয়া ও ঘন কুয়াশায় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় নেমে এসেছে হাড়কাঁপানো শীত। জেলার সর্বত্রই শীতের প্রবলতা অনুভূত হওয়ায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। বিশেষ করে দিনের শুরু থেকে শুরু হওয়া হিমেল বাতাস নিম্ন আয়ের মানুষের কষ্ট বাড়িয়ে দিয়েছে কয়েকগুণ।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সকাল ৬টায় স্থানীয় আবহাওয়া অফিস তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করে। আগের দিনও তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির ঘরেই ঘোরাফেরা করছিল। বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৯৯ শতাংশ।
শীত বাড়ার কারণে সন্ধ্যার পর রাস্তাঘাট প্রায় ফাঁকা হয়ে যায়। কুয়াশার ঘনত্ব বাড়তে থাকায় যানবাহনগুলো হেডলাইট জ্বালিয়ে ধীরগতিতে চলতে বাধ্য হয়। রাতের অন্ধকার নামলেই অনেকেই ঘর থেকে বের হওয়া এড়িয়ে চলছেন। ছিন্নমূল মানুষ, ভ্যানচালক, দিনমজুর আর রাজমিস্ত্রিদের ওপর সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে। কেউ ফুটপাতের পাশে, কেউবা দোকানের চুলার পাশে আগুন পোহাচ্ছেন শীত থেকে বাঁচতে।
রৌশনাবাগ এলাকার রাজমিস্ত্রি আক্তার হোসেন বলেন, ‘হাওয়া এমন ঠান্ডা যে হাত-পা জমে যায়। কাজ না করলে সংসার চলবে না, তাই কষ্ট হলেও মাঠে নেমে পড়তে হচ্ছে।’
উপজেলা সদরের ভ্যানচালক জাফর আলী জানান, ‘সকালে ভ্যান বের করা খুব কষ্ট। উত্তরের বাতাস মুখে লাগে মানে বরফের মতো লাগে।’
শীতের তীব্রতা বাড়ায় শিশু ও বয়স্কদের মধ্যে শীতজনিত রোগের উপসর্গও বৃদ্ধি পেয়েছে। স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে রোগীর চাপ আগের তুলনায় বেড়েছে বলে জানা গেছে। চিকিৎসকরা সতর্ক থাকতে, গরম কাপড় ব্যবহার করতে এবং নিয়মিত উষ্ণ খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিসের সহকারী কর্মকর্তা জিতেন্দ্র নাথ রায় বলেন,উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে প্রবাহিত বাতাসের কারণে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ চলছে। তাপমাত্রা আরও কমার সম্ভাবনা রয়েছে।
তেঁতুলিয়ার মানুষের চোখে এখন একটাই প্রশ্ন—এই শীত আর কতদিন? শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকলে সামনে পরিস্থিতি আরও কঠিন হতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।

রিপোর্টারের নাম 


















